নিশ্চয়ই — এখানে ওই ৫০০ শব্দের গল্পটির বাংলা অনুবাদ দেওয়া হলো:


বৃষ্টি শুরু হয়েছিল কোনো সতর্কতা ছাড়াই—একটি নরম ফোঁটা থেকে যা ধীরে ধীরে রাস্তা রুপালি করে দিল, ছাদের ওপর ঝিকমিক আলো ফেলল। মানুষজন তাড়াহুড়ো করে ফুটপাথ ধরে হাঁটছে, কেউ মাথার উপর ব্যাগ ধরে, কেউ হাসছে, কেউ আবার বিরক্ত। কোণের ছোট্ট কফিশপ থেকে ভেসে আসছে ভাজা কফি বিনের গন্ধ, যা মিশে যাচ্ছে ভেজা মাটির মিষ্টি গন্ধের সঙ্গে। এক বেড়াল বেঞ্চের নিচে বসে, তার লোম ভেজা, অলস চোখে দেখছে মানুষের জুতো আর ছাতার আসা-যাওয়া। ভেতরে একটি পুরনো ঘড়ি টিকটিক করছে অনিয়মিত ছন্দে, তার কাঁটাগুলো কাঁপছে যেন সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে কষ্ট হচ্ছে।

এক টেবিলে বসে আছে এক তরুণ, ল্যাপটপ খুলে। সে লিখতে চায়, কিন্তু পর্দায় জ্বলজ্বলে কার্সরটি যেন তাকে উপহাস করছে। কয়েক মিনিট পরপর সে জানালার বাইরে তাকায়—অনুপ্রেরণা খুঁজছে বলে ভান করে, অথচ আসলে শুধু সময় নষ্ট করছে। ঘরের অপর পাশে এক বৃদ্ধা ধীরে ধীরে চা নাড়ছে, ছেলেটির দিকে তাকিয়ে আছে এমনভাবে যেন তার দ্বিধার মধ্যেই গল্পটা পড়ে ফেলতে পারে। সে হেসে ফেলে। একসময় সেও এমনই ছিল—স্বপ্নে ভরা, অপেক্ষা করত শব্দগুলো যেন হাওয়ায় ভেসে আসবে।

কফিশপের পিছনের কোণে দুই বিদেশি পর্যটক মানচিত্র নিয়ে ঝগড়া করছে। তারা পথ হারিয়েছে, কিন্তু কেউই সেটা স্বীকার করতে চায় না। একজন উত্তর দিকে যেতে বলে, আরেকজন দক্ষিণে। ওয়েটার, কথোপকথন শুনে, ভাঙা ইংরেজিতে দিকনির্দেশ দেয়, কিন্তু আশ্চর্যভাবে সবাই তা বুঝে ফেলে। তারা হাসে, ধন্যবাদ জানায়, তবুও তর্ক চালিয়ে যায়। জীবন যেন সবসময়ই এমন—ঠিক উত্তর জানলেও আমরা অনিশ্চয়তায় থাকতে ভালোবাসি।

বাইরে বৃষ্টি এখন আরও ভারী। কাছের এক বইয়ের দোকানের নীয়ন আলো প্রতিফলিত হচ্ছে জমে থাকা জলে, রঙিন টুকরোগুলোর মতো ঝলমল করছে। এক সাইকেলচালক ছিটিয়ে চলে গেল জল, বাসের হর্ন বাজল দূরে, আর এক শিশু সেই শব্দের দিকে দৌড়ে গেল, হাতে হলুদ বেলুন। বেলুনটা বাতাসে দুলছে, ছিঁড়ে যেতে চায়, কিন্তু ছাড়ছে না।

কফিশপে তরুণটি অবশেষে টাইপ করা শুরু করল। তার আঙুল ধীরে চলল, তারপর দ্রুত—যেন কিছু একটার তাল মিলল। শব্দগুলো আসতে লাগল—অপূর্ণ, কিন্তু জীবন্ত। বৃদ্ধা তার চা শেষ করে কিছু কয়েন রেখে বেরিয়ে গেল, ছাতা না খুলেই। পর্যটকরাও বেরিয়ে গেল, এখনও হাসছে, এখনও তর্ক করছে।

বেঞ্চের নিচে থাকা বেড়ালটি হাই তুলে গা ঝেড়ে উঠে পড়ল, শুকনো জায়গার দিকে হাঁটল। এক মুহূর্তের জন্য পুরো শহরটা যেন ছন্দে বাঁধা হয়ে গেল—বৃষ্টি পড়ছে, মানুষ চলছে, গল্পগুলো শুরু হচ্ছে আর শেষ হচ্ছে নিঃশব্দে। তরুণটি জানালার দিকে তাকাল, ফোঁটার রেখা বেয়ে নামতে দেখল জল। হঠাৎই বুঝল, সে শুধু গল্প লিখছে না—সে নিজেই এক গল্পের ভেতরে।

এভাবেই বৃষ্টি পড়তে থাকল, ঘড়ি টিকটিক করল, আর শহর নিশ্বাস নিতে থাকল—অজান্তে, হয়তো—যে এক ছোট কফিশপে, এক লেখক অবশেষে তার শব্দগুলো খুঁজে পেয়েছে।


(প্রায় ৫০৫ শব্দ।)

internet rights are human rights